

May 4, 2025
| নিজস্ব প্রতিবেদক
পরিবেশ, জলবায়ু, জনস্বাস্থ্য এবং অর্থনীতির ঝুঁকি বিবেচনায় কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে প্রস্তাবিত ৬৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ওরিয়ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবি জানিয়েছে দেশের ১৪৪টি নাগরিক সংগঠন। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হলে কয়লা আমদানিতে বছরে প্রায় ১৫৮৭ কোটি টাকা গচ্চা যাবে বলেও সতর্ক করেছে সংগঠনগুলো।
এই দাবিতে সংগঠনগুলো ‘বাংলাদেশের প্রতিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক কর্মজোট (বিডব্লিউজিইডি)’ এর সঙ্গে একত্রিত হয়ে আজ রবিবার অর্থ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাসহ কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) বরাবর চারটি পৃথক আবেদনপত্র জমা দিয়ে দিয়েছে।
পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা (ইআইএ) বাতিল, বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তি (পিপিএ) বাতিল এবং বরাদ্দকৃত ঋণ ও জমির ইজারা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বছরে ৪.৬১ লক্ষ টন কার্বন ডাই অক্সাইডসহ বিপুল পরিমাণ দূষণকারী গ্যাস, ফ্লাই অ্যাশ ও বটম অ্যাশ নির্গত হবে, যা স্থানীয় জনস্বাস্থ্য, জীববৈচিত্র্য ও সামুদ্রিক পরিবেশের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে। এ ছাড়া বছরে ১৫৮৭ কোটি টাকা মূল্যের কয়লা আমদানি এবং ৩০৫৯ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের ফলে জাতীয় অর্থনীতি ও রিজার্ভে বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হবে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, প্রকল্প বাস্তবায়নে ধারাবাহিক ব্যর্থতা সত্ত্বেও বারবার সময় বাড়ানো হচ্ছে, যা বিদ্যমান চুক্তির শর্ত, জাতীয় স্বার্থ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যের পরিপন্থী। অন্যদিকে, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে ইআইএ প্রতিবেদনের নানা ঘাটতি ও তথ্য গোপনের বিষয়টি তুলে ধরা হয় এবং তা বাতিলের দাবি জানানো হয়।
এ ছাড়া কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) এর কাছে জমা দেওয়া চিঠিতে ২২৫ একর জমির বিতর্কিত ইজারা বাতিলের দাবি জানানো হয়, যেখানে পূর্ব পরিকল্পনায় নবায়নযোগ্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কথা ছিল।
এ আন্দোলনে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিসহ (বেলা) বিভিন্ন পরিবেশ আইন সংগঠন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, উপকূলীয় সংগঠন, কৃষি, নারী, শ্রমিক ও তরুণদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনসহ মোট ১৪৪টি প্রতিষ্ঠান সংহতি জানিয়ে সই করেছে।
সংগঠনগুলোর জোরালো আহ্বান, প্রকল্পটি বাতিল না হলে, তা ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য অর্জনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। কয়লা আমদানিতে ব্যয় হবে কয়েক হাজার কোটি টাকা। মাতারবাড়ির জীববৈচিত্র জীবাশ্ম জ্বালানির এই মরণফাঁদ থেকে মুক্ত হোক।
সংবাদ লিঙ্ক: ওরিয়ন কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবি ১৪৪ সংগঠনের