top of page

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি

Nov 18, 2025

| নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ন্যায্য রূপান্তরে রাজনৈতিক দলগুলোর স্পষ্ট অঙ্গীকার নিশ্চিত করতে ১২ দফা নাগরিক ইশতেহার প্রকাশ করা হয়েছে।


ইশতেহারে বলা হয়েছে, দুর্নীতি প্রতিরোধে সব বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি ও বাস্তবায়ন চুক্তি তথ্য অধিকার আইনের আওতায় প্রকাশ করতে হবে। এই খাত থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ইশতেহার প্রকাশ করা হয়।


বাংলাদেশের প্রতিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক কর্মজোট (বিডাব্লিউজিইডি), বেলা, বিলস, ক্লিন, ইটিআই বাংলাদেশ, লিড বাংলাদেশ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) ও রিগ্লোবাল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহার পাঠ করেন ক্লিনের নেটওয়ার্ক এডভাইজার মনোয়ার মোস্তফা। বিডাব্লিউজিইডি’র সদস্যসচিব হাসান মেহেদীর সঞ্চালনায় বক্তৃতা করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী ওয়াসিউর রহমান তন্ময়, লিড বাংলাদেশের গবেষণা পরিচালক শিমনউজ্জামান প্রমুখ।


উত্থাপিত ইশতেহারে বলা হয়ে, জলবায়ু ঝুঁকি, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে নতুন নীতি করতে হবে। নীতি প্রণয়নের আগে নাগরিক সমাজ ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে হবে। শিল্প, ব্যবসা ও আবাসিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার ২০৩০ সালে ৩০ শতাংশ এবং ২০৪১ সালে ৪০ শতাংশে উন্নীত করতে বাধ্যতামূলক করতে হবে; কর রেয়াত ও সহজ ঋণ দিতে হবে। নতুন প্রকল্পের অনুমোদন বন্ধ এবং অকার্যকর কেন্দ্রগুলো নবায়নযোগ্য স্থাপনায় প্রতিস্থাপন করতে হবে। অকার্যকর কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ বাতিল করতে হবে। পুরনো গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্র বন্ধ করে সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো এবং শিল্পে বিদ্যুতের ব্যবহার উৎসাহিত করতে হবে।

আরো বলা হয়, ২০৩০ সালে ৩০ শতাংশ, ২০৪১ সালে ৪০ শতাংশ ও ২০৫০ সালে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করতে হবে; জাতীয় বাজেটে অন্তত ৪০ শতাংশ বরাদ্দ রাখতে হবে। বৈদ্যুতিক যানবাহনের ওপর শুল্ক ও কর কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ কমানো এবং ব্যাটারি আমদানি কর শূন্যে নামাতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে নারী, তরুণ, শ্রমজীবী ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ ও ব্যাংক ঋণসুবিধা দিতে হবে।


মনোয়ার মোস্তফা বলেন, দেশে ৯৯ দশমিক ২৫ শতাংশ পরিবার বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এলেও এর আড়ালে রয়েছে আর্থিক অস্থিতি, পরিবেশগত ক্ষতি এবং জনস্বাস্থ্যের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি।


২০০৮ সালে বাংলাদেশের কার্বন নিঃসরণ ছিল ১৪৬ দশমিক ৮ মিলিয়ন টন, যা এখন বেড়ে হয়েছে ২৮১ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন। দূষণের কারণে দেশের বায়ুমান বিশ্বে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে। তাই ন্যায্য, স্বচ্ছ ও সামাজিকভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক শক্তি রূপান্তর এখন সময়ের দাবি। অস্বচ্ছ চুক্তি, দুর্বল পরিকল্পনা এবং জীবাশ্ম জ্বালানি-নির্ভর নীতির কারণে বিদ্যুৎ খাতে দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক ক্ষতি বাড়ছে, যা মানুষের ওপর বাড়তি ব্যয়ের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। তাই যাতে জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভরতা কমে, শক্তির সার্বভৌমত্ব দৃঢ় হয় এবং পরিবেশসহনশীল, জনগণকেন্দ্রিক জ্বালানি রূপান্তর নিশ্চিত হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে এমন অঙ্গীকার থাকতে হবে।


বিদ্যুৎ খাতের আর্থিক গরমিলের চিত্র তুলে ধরে হাসান মেহেদী বলেন, সাধারণ মানুষের অর্থ জীবাশ্ম জ্বালানিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর হাতে চলে যাচ্ছে। গত ১৬ বছরে বেসরকারি কম্পানিগুলো ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ নিয়েছে এক দশমিক ৭২ ট্রিলিয়ন টাকা। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ক্ষতি দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৫৩ ট্রিলিয়ন টাকা, আর সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয়েছে ২ দশমিক ৩৬ ট্রিলিয়ন টাকা।


সংবাদ লিঙ্ক: জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি

bottom of page