top of page

সরাসরি বিদ্যুৎ বেচতে পারবে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র

Nov 30, 2024

| কালবেলা প্রতিবেদক

বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র সরাসরি গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করবে—এমন একটি বিধানসহ নতুন জ্বালানি নীতি করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। চাইলে সরকারও এসব কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনতে পারবে। নতুন নীতিতে এ খাতে অর্থায়নের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি সোলার স্থাপনের জায়গা ও সঞ্চালন লাইনে যুক্ত হওয়ার ব্যবস্থা করবে সরকার। গতকাল শনিবার অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টাস ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘র্যাপিড ট্রান্সিজশন টু রিনিউয়্যাবলস; রোল অব ডমেস্টিক ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন্স’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।


তিনি জানান, এ পরিকল্পনা থেকেই বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরকারের বিদ্যুৎ কেনা সংক্রান্ত ইনডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার বা আইপিপি নীতিমালা বাতিল করা হচ্ছে। উপদেষ্টা আরও বলেন, এখন থেকে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে শুধু সরকারই বিদ্যুৎ কিনবে না। নিজেরাই গ্রাহক খুঁজে বের করবে কেন্দ্রগুলো। আমরা সঞ্চালন লাইন ব্যবহারের সুযোগ দেব ভাড়ার বিনিময়ে।


ফাওজুল কবির বলেন, বিদুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগ ও শিল্প এলাকায় সঞ্চালন লাইনও প্রয়োজনে সরকার নির্মাণ করে দেবে বলে জানান তিনি। এজন্য আইপিপি নীতিমালা বাদ দিয়ে ‘মার্চেন্ট পাওয়ার পলিসি (এমপিসি)’ এর খসড়া তৈরি করা হয়েছে। খুব শিগগির তা প্রকাশ করা হবে। সরকার প্রতিযোগিতাপূর্ণ পদ্ধতিতে সব সেবা ও পণ্য কিনতে চায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উন্মুক্ত পদ্ধতিতে টেন্ডার দেওয়া হবে। যাদের সক্ষমতা থাকবে তারাই অংশ নেবেন। উপযুক্ত হলে কাজ পাবেন।’


২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের করা বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনটি ‘দুর্নীতি করার জন্য’ তৈরি হয়েছিল বরেও মন্তব্য করেন উপদেষ্টা। তার অভিযোগ, আইনটিতে বিদ্যুৎখাতের ব্যবসায়ী, মন্ত্রী ও আমলাদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। উচ্চ আদালত এই আইনের দুটি ধারা অবৈধ ঘোষণার পর আইনটি অন্তর্বর্তী সরকার বাতিল করে দেবে বলেও জানান।

              

নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন সম্প্রসারণে সরকারি জমি দেওয়ার কথাও বলেন জ্বালানি উপদেষ্টা। তিনি জানান, ‘সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ করে রেলওয়ের শত শত বিঘা জমি পড়ে আছে। অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে জমি দেওয়া হয়েছে। সে সব জমি নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে ব্যবহার করা যাবে।’ বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা ও উৎপাদন হিসাবে পোশাক খাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি লাগবে আড়াই থেকে ৭ হাজার মেগাওয়াট। এজন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি ছাড়া গত্যন্তর নেই বলেও মনে করেন ফাওজুল। বিশাল এই সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলোকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সম্পত্তির বিপরীতে জমানাত রেখে এ খাতে ঋণ দিলে ব্যাংকগুলো মুনাফা নিশ্চিত করতে পারবে ঋণও আদায় হবে। তৈরি পোশাক খাতের ক্রেতারাও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর জোর দিচ্ছে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘দেশের তৈরি পোশাক খাতের বড় ক্রেতার একটি এইচএনএম জানিয়েছে, আগামীতে শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত বিদ্যুতের অন্তত ১৫ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে আসতে হবে।’


তিনি বলেন, শিল্প স্থাপনেও সরকারি জমি প্রস্তুত করে দেওয়া হবে যাতে উদ্যোক্তারা এসেই ‘প্লাগ অ্যান্ড প্লে’ পদ্ধতিতে কারখানা চালু করতে পারেন। উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিলেও বেক্সিমকো, এস আলম গ্রুপের হিসাবে টাকা নেই, সব ফাঁকা।’


সেমিনারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ব্যাংকের অর্থায়ন যৎসামান্য। এখানে বিনিয়োগের সুযোগ আছে। এ খাতে বিনিয়োগ করে আসছে এমন ১৮টি বিদেশি অর্থায়ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেও সরকার ও ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা নিতে পারেন।


ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে সেমিনারে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বেসরকারি দ্য সিটি ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ আশানুর রহমান, কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক বা ক্লিনের চিফ এক্সিকিউটিভ হাসান মেহেদী, সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড পার্টিসিপটরি রিসার্চ- সিইপিআরের চেয়ারপারসন গৌরাঙ্গ নন্দী।


সংবাদ লিঙ্ক: সরাসরি বিদ্যুৎ বেচতে পারবে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র

bottom of page