top of page

“এডিবির একমুখী নীতিতে ঝুঁকিতে জ্বালানি খাতে ”

Apr 22, 2025

| স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের শতাধিক প্রকল্পে ১৭.৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), যার অধিকাংশই জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক। ব্যাংকটির একমুখী বিনিয়োগ নীতির ফলে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে ক্রমশ ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছে এনজিও ফোরাম অন এডিবি।


মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর বাংলামোটরে আয়োজিত “বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে এডিবি’র বিনিয়োগ ঝুঁকি উন্মোচন” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য উঠে আসে। এডিবির ৫৮ তম বার্ষিক সাধারণ সভার আগে যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এনজিও ফোরাম ও কোস্টাল লাইভলিহুড এন্ড এনভাইরোনমেন্টাল একশন নেটওয়ার্ক (ক্লিন)।


সংবাদ সম্মেলনে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে এডিবি’র প্রতি আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১৯৭৩ সাল থেকে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে এডিবির বিনিয়োগকৃত প্রকল্প ১০৬টি। এরমধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন, তেল-গ্যাস সঞ্চালন ও বিতরণ খাতে এডিবির বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে এডিবি’র বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত ঝুঁকি বিবেচনায় না নেয়ার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। ফলে এডিবি’র ৯.৮৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ৬৭টি জ্বালানি প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে। যা এশিয়ার বহুজাতিক আর্থিক সংস্থাটির পরিকল্পনা, দক্ষতা এবং দীর্ঘমেয়াদী কৌশল নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।


এনজিও ফোরাম অন এডিবি’র নির্বাহী পরিচালক রায়ান হাসান বলেন, “এডিবি বাংলাদেশে ২ হাজার ৮৮৪.৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য মোট ৪.৮৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। যার মধ্যে ৮২.৯ শতাংশ অর্থায়ন জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভর প্রকল্পে, মাত্র ২.৫৫ শতাংশ সৌরবিদ্যুতে এবং বায়ু বিদ্যুতে এখন পর্যন্ত কোনো বিনিয়োগ নেই। প্রতি মেগাওয়াটে জীবাশ্ম-জ্বালানিভিত্তিক প্রকল্পে বিনিয়োগ ২.০৪ মিলিয়ন ডলার, যেখানে সৌরবিদ্যুত প্রকল্পে তা মাত্র ০.৫১ মিলিয়ন ডলার, যা বেশ উদ্বেগজনক।


ক্লিন-এর প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী বলেন, এডিবি ভেড়ামারা থেকে খুলনা পর্যন্ত ১৬৫ কিলোমিটারের দীর্ঘ গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। বাংলাদেশে গ্যাস নেই জেনেও তারা এ কাজটি করেছে। কল্পিত গ্যাসের ওপর নির্ভর করে আবার খুলনায় ২২৫ ও ৮০০ মেগাওয়াটের দুটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনিয়োগ করেছে। অথচ এসব প্রকল্প গ্যাসের অভাবে বছরের পর বছর বসে আছে, জনগণের ওপর বোঝা হয়ে দাড়িয়েছে। একটি বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংক হিসেবে এডিবি এ কাজটি করতে পারে না। এডিবিকে অবশ্যই তার জ্বালানি নীতি পরিবর্তন করে শতভাগ নবায়নযোগ্য উৎসের দিকে যেতে হবে।


সংবাদ সম্মেলনে জীবাশ্ম জ্বালানিতে সকল অর্থায়ন বন্ধ এবং ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরে সমর্থন, প্রকৃত সুরক্ষা বাস্তবায়ন ও এফপিআইসি (ফ্রি, প্রায়োর এবং ইনফর্মড কনসেন্ট) নিশ্চিত করা এবং মানবাধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতি রাখা, এবং কার্বন মার্কেট, গ্রিনওয়াশিং ও কর্পোরেট স্বার্থের নামে ছদ্ম জলবায়ু সমাধান প্রত্যাখ্যান করার দাবি জানানো হয়।


সংবাদ লিঙ্কঃ “এডিবির একমুখী নীতিতে ঝুঁকিতে জ্বালানি খাতে”

bottom of page